গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ঘাঘট নদীর একাধিক স্থানে দীর্ঘদিন থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে কথিত বালুদস্যুরা। তবে এনিয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জামালপুর ও দামোদরপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নলডাঙ্গা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঘাঘট নদীতে দেখা যায় এই বালু উত্তোলনের চিত্র। এখানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় সাইদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও হাসান আলী। এছাড়া উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা বাঁধের মাথার নীলকান্দের ছড়া এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ফুল মিয়া ও জুয়েল মিয়া। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় বালু বহনের জন্য ড্রাম ট্রাক ও কাকড়ার (ট্রাক্টর) সারিবদ্ধ লম্বা লাইন দেখে যে কারো মনে হবে এখানে চলছে বালু উত্তোলনের মহাউৎসব।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটি অসাধু চক্র প্রভাবশালীদের ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে এই বালু উত্তোলন করছে। এতে নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়াসহ একাধিক ¯’ানে ভাঙনের সৃষ্টি হ”েছ। একারণে কৃষি জমি ও বসতভিটা পড়েছে হুমকির মুখে। পাশাপাশি ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের লোকজন। এছাড়া গ্রামীন এসব সড়ক ও নদীর বাঁধ দিয়ে বালু বহনের জন্য ড্রাম ট্রাক, শ্যালো ইঞ্জিল চালিত পাওয়ার ট্রলি ও কাকড়ার (ট্রাক্টর) অবাধ চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট ও বাঁধ নষ্ট হয়ে যা”েছ। এছাড়া পরিবহনের সময় এই এই বালু বাতাসে উড়ে গিয়ে পথচারীদের চোঁখে মুখে পড়ছে। এতে তারা নানা ধরনের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হ”েছ। অন্যদিকে এসব ধুলার কারণে ওইসব এলাকার বাসা-বাড়িতে থাকার অযোগ্য পরিবেশ হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, সড়ক দিয়ে বে-পরোয়া ভাবে এই সব বালুবহনকারী যানবাহন চলাচল করায় দুর্ঘটনাও ঘটছে।

তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

বালু উত্তোলনকারী ফুল মিয়া বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করে জানান, এ বালু আমার না। জনৈক প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি আমার কাছে হাজার হিসাবে চুক্তি করে এইসব বালু উত্তোলন করে নি”েছন। তারা এই বালু দিয়ে কি করবেন। তা আমার জানা নাই।

বালু উত্তোলনের সতত্যা স্বীকার করে দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ জেড এম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন জানান, ওইসব ¯’ানে বালু উত্তোলন বন্ধে থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।

জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া গ্রহণ করা হবে।

সাদুল্লাপুর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যব¯’া নেওয়া হবে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রোকসানা বেগম বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি শুনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া গ্রহন করা হবে।