গত ৩ মাসে বিএসএফের গুলিতে লালমনিরহাটের বিভিন্ন সীমান্তে ৬ জন নিহত হয়েছে এবং হাতীবান্ধা দইখাওয়া সীমান্ত দিয়ে শতাধিক ভারতীয় গরু ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন রকমের মাদকদ্রব্য পাচারের অভিযোগ। এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ৯নং আদর্শ গোতামারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বহুল আলোচিত মাদকদ্রব্য পাচারের নিরাপদ রুট দিয়ে মঙ্গলবার ভোর রাতে ৯০২ থেকে ৯০৩ নং পিলারের মাঝ দিয়ে শতাধিক ভারতীয় গরু ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পাচার করে আনে ওই এলাকার বকতার হোসেনের ছেলে হুন্ডী মাইদুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে আমিনুর রহমান, আজগার আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম ওরফে রবি এবং মৃত্যু. হোসেন আলীর ছেলে ছাদিকুল ইসলাম। ওই হুন্ডী ও মাদকদ্রব্য সিন্ডিকেট হোতারা বেপরোয়া ভাবে ওই সীমান্ত দিয়ে ব্যাপক চোরাচালান অব্যহত রাখলেও দেখার যেন কেউ নেই। এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে- দইখাওয়া বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার ফরিদ ও হাবিলদার আনোয়ারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এবং প্রতিরাতে লক্ষ টাকার কমিশনের বিনিময়ে ওই সব চোরাচালান অব্যহত রয়েছে সংশ্লিষ্টরা জানান। লালমনিরহাট সীমান্তে কয়েকটি বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে। এসব ক্যাম্পের কতিপয় অসৎ বিজিবি’র কমান্ডারের কারণে সীমান্তে যেন, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাবাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে বাংলাদেশীদের মৃত্যু যেন থামছে না। মঙ্গলবার ১৬ নভেম্বর, ২০২১ইং গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, গত সেপ্টেম্বরে ২, অক্টোবরে ২ এবং নভেম্বরে ২ জন বাংলাদেশী সহ লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী, হাতীবান্ধায় এবং কালীগঞ্জের গোড়লের (লোহাখুচি) সীমান্তে গত ৩ মাসে মোট ৬ জন বাংলাদেশী যুবক গরু ও মাদক পাচার করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে। ওই চোরাচালানী কাজে কতিপয় সংশ্লিষ্ট বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডাররা জড়িত থাকায় প্রায় লালমনিরহাটের বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের সদস্যদের গুলিতে জীবন দিতে হচ্ছে অনেক যুবকের। সীমান্তে যে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। এদিকে মঙ্গলবার ১৬ নভেম্বর, ২০২১ইং তারিখ ভোর রাতে শতাধিক ভারতীয় গরু ও মাদকদ্রব্য পাচারের বিষয়টি নিয়ে দইখাওয়া ক্যাম্পের কমান্ডার ফরিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাচারের ঘটনাটি জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া মাত্র কোন মন্তব্য না করে ফোন কেটে দিয়েছেন। দইখাওয়া সীমান্তের একাধিক কৃষক জানান, ব্যাপক চোরাচালান হওয়ায় আমাদের বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি প্রতিদিনেই হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ১ সপ্তাহের মধ্যে চোরাচালান বন্ধের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। এদিকে হুন্ডী মাইদুল ইসলাম গং এর বিরুদ্ধে চোরাচালানীর অভিযোগকারী ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী আলম বাদশা বাদী হয়ে মঙ্গলবার ১৬ নভেম্বর, ২০২১ইং তারিখ বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাতীবান্ধা-লালমনিরহাট এর আদালতে আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে হুন্ডী মাইদুল ইসলাম গং কে আসামী করা হয়েছে। এর আগে সোমবার ১৫ নভেম্বর, ২০২১ইং তারিখ হুন্ডী সিন্ডিকেটের হোতা মাইদুল ইসলাম গং এর বিরুদ্ধে যে মামলাটি দায়ের করা হয়। যাহার মামলা নং- ১৮৭/২০২১ইং।