নাটোরের বড়াইগ্রামে স্বরাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের স্টিকার লাগানো পাজেরো জিপ গাড়ির ব্যাক সিটের পেছনে থেকে হাত-পা বাঁধা হযরত আলী নামে এক জুট গোডাউনের ম্যানেজারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই গাড়ির চালককেসহ আরও দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বনপাড়া বাইপাস চত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মরদেহ ও গাড়ির চালককে আটক করা হয়।

নিহত হযরত আলী লালমনিরহাটের জেলা সদরের বড়বাড়ী এলাকার বাসিন্দা এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার বাগানবাড়িতে তিন মেয়ে সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে বাগানবাড়ি ৪মাথার পাশে একটি ঝুটের গোডাউনে ম্যানেজার হিসেবে চাকুরী করতেন। হজরত আলীর স্ত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন গত রবিবার থেকে আমার স্বামী বাসায় আসেনা শুনেছি অন্য কর্মচারীর মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে আমার স্বামীকে আটকে রেখে মারডাং করছে এবং মেরে ফেলবে, তাই আমি পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানালে তাদের পরামর্শে সোমবার আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ আমাকে সাথে নিয়ে ঝুট গোডাউনের মালিক মিজানের বাসায় তদন্ত করতে গিয়ে উল্টো আমাকে গালিগালাজ করে তারিয়ে দেওয়ায় বাসায় আসি, পরে বাসার লোকজনের পরামর্শে রাতেই কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানায় অভিযোগ করলে কাশিমপুর থানা পুলিশ রাতেই মিজানের বাসায় গিয়ে মিজানের স্ত্রী ও তার মামি এবং বাসার মালিকের ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে আসে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মিজানের গাড়ীর জিপিএস ট্রেকিং করে নাটোরের বড়াইগ্রাম থেকে মিজান মিজানের জিপ গাড়িতে থাকা আমার স্বামীর লাশসহ আটক করে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় হজরত আলীর স্ত্রী ও তিন সন্তান প্রথম সন্তানের বয়স ৬বছর দ্বিতীয় সন্তানের বয়স আড়াই বছর তৃতীয় সন্তানের বয়স ১বছর। ভাড়া বাসার ও স্হানীয় বাসিন্দারা বলেন সোমবার ওই ঝুট গোডাউনের মালিক মিজানুর রহমান মিজান বাসায় এসে তার বেতনের পাওনা টাকা থেকে ৮হাজার এবং হজরত আলীর ব্যাবহারিত মোবাইলটি দিয়ে বলেন এই নেন ৮হাজার টাকা এবং হজরতের মোবাইল আরও টাকা পয়সা লাগলে জানাবেন আমি সমস্ত ব্যায়ভার বহন করবো যখন যা লাগে আমাকে ফোন করে বলবেন আমি দিয়ে দিবো। সে সময় হজরত আলী কোথায় আছে এমন প্রশ্নের জবাবে মিজান বলেন সে আমার কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে পালিয়েছে। উপস্থিত লোকজন মিজানের গতিবিধি এবং কথাবার্তা সন্দেহ হলে হজরত আলীর স্ত্রীকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলেন।

হত্যা করার পূর্বের হজরত আলীর ছবি

এসময় গাড়ির ব্যাক সিটের পেছন থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মরদেহটি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গাড়ির চালক মিজানকে আটক করা হয়। মূল ঘটনা উদঘাটনে আটক গাড়ী লাশ এবং চালককে গাজীপুরের কাশিমপুর থানা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে,পরে বিস্তারিত জানা যাবে।

আটক মিজান জানান, নিহত হযরত তার গোডাউনের কর্মচারী। মরদেহটি গুম করার উদ্দেশ্য ছিল তার। মরদেহটি ফেলে দেওয়ার জন্য নিজের গাড়িতে করে পাবনার ঈশ্বরদী পর্যন্ত নিয়ে যায়। কিন্তু ফেলা দেওয়ার জন্য সুবিধাজনক জায়গা না পেয়ে ঘুরছিল। এর মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়ায় বনপাড়া হয়ে বাসায় ফেরার পথে পুলিশের হাতে আটক হয়। হজরত আলীর পরিবার জানান হজরত আলীর লাশটি গাজীপুরের জয়দেবপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পোস্ট মর্টেম রিপোর্টের জন্য রাখা হয়েছে এবং এ হত্যাকান্ডে আটককৃতদের থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এবিষয়ে জানতে কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানা পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ মাহবুবে খোদার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।