কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ (অবঃ) আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনে করেছিলো গুলি করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরে ঢুকিয়ে রাখবে, তাদের দমিয়ে রাখবে, তাতে করে বিএনপি মিছিল-মিটিং করতে পারবে না, ভয়ে আত্মগোপন করে থাকবে। কিন্তু পরিনামে হয়েছে এর উল্টোটা। আওয়ামী লীগ যতো গুলি চালিয়েছে ততই বাংলাদেশের মানুষ এই ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় লালমনিরহাট জেলা বিএনপির কার্যালয় চত্ত্বরে লালমনিরহাট জেলা বিএনপির উদ্যোগে পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ভোলায় নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান, মুন্সিগঞ্জে শহীদুল ইসলাম শাওন ও যশোরের আব্দুল আলিম হত্যার প্রতিবাদে শোক র্যালী ও সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেছেন।
আসাদুল হাবিব দুলু আরও বলেন, ইতিহাস স্বাক্ষী দেয় রক্ত কোনো দিন বৃথা যেতে পারে না। বায়ান্নোর রক্ত বৃথা যায় নাই, ‘৬২ ও ‘৬৯, ‘৭০-এর রক্ত এবং সর্বশেষ ‘৯০-এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের রক্তও বৃথা যায়নি। যার প্রমান বাংলাদেশের মানুষ স্বাক্ষী হয়ে আছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন কায়েম করেছেন। এই সরকার এমন পর্যায়ে চলে গেছে, তারা মানুষ পর্যায়ে নেই। তারা এমন উচ্চ পর্যায়ে আসন গ্রহণ করেছে যে, তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা যাবেনা, কথা বলা যাবেনা, তাহলে আপনারা রাজনীতি কেন করেন?
দুলু বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে শত শত মানুষের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিচ্ছেন। এভাবে মামলা দিয়ে তারা মনে করছে, তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা যাবে না। আপনারা জানেন, সারাদেশে মানুষ আজ ফুসে উঠেছে, আপনারা চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছেন, ব্যারিগেট দিয়েও আটকে রাখা যাচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দুলু আরও বলেন, যে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য যারা প্রতিবাদ করে, তাদের উপর নির্ভর করে, কিভাবে বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করতে পারে, এ থেকেই প্রমাণ হয় যে, আওয়ামী সরকারের কথা বাংলাদেশের মানুষ শুনেনা, ইলেকশন কমিশনের কথা প্রশাসন শুনেনা, শেখ হাসিনার কথাও বাংলার মানুষ শুনতে আর চায়না।
নিহত বিএনপির নেতাকর্মীদের স্মরণে দুলু বলেন, আমরা নিহত পরিবারকে কথা দিয়েছি, নিহত শাওন ও নূর আলম এর পরিবার কে কথা দিয়েছি, যতো দিন পর্যন্ত এ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হবে না, ততদিন আমরা বাড়ি ফিরে যাবো না।
সারা দেশের কেন্দ্রীয় বিএনপির ঘোষিত শোক র্যালীর অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, পৌর বিএনপির সভাপতি আফজাল হোসেন প্রমুখ। এ সময় লালমনিরহাট জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা শেষে প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মীর অংশ গ্রহণে একটি শোক র্যালী জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিশন মোড় গোল চত্ত্বরে এসে শেষ হয়েছে।